পাঞ্জাবে ভোট হয়ে গেল। দেখা গেল ভোটদানের হার গত কয়েক বছরের হিসেবে সর্বনিম্ন। বিশেষত আপ যে অঞ্চলগুলিতে ভালো সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করেছিল, পরিসংখ্যান জানাচ্ছে মূলত সেই অঞ্চলগুলিতেই প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা অপ্রত্যাশিত রকমের কম। যে সব অঞ্চলে আম আদমি পার্টির বিধায়ক রয়েছে, সেই অঞ্চলগুলিতেও ভোটদানে অনীহা ছিল চোখে পড়ার মতো। মাসখানেক আগেও মনে করা হচ্ছিল এই নির্বাচনে কংগ্রেস বড় ব্যবধানে জয়ী হবে। তার অনেকগুলি কারণ ছিল। বিশেষত কৃষক আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পাঞ্জাবের নির্বাচনে পড়তে বাধ্য। একমাত্র বিজেপি...
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রথম দফার ভোট মিটেছে গতকালই। সেই উত্তরপ্রদেশ, যা জনসংখ্যার নিরিখে দেশের বৃহত্তম রাজ্য। ভারতের প্রায় ১৩৫ কোটি মানুষের মধ্যে গড়ে প্রতি ছ’জনে এক জন এই রাজ্যের বাসিন্দা। যদি উত্তরপ্রদেশ আলাদা দেশ হত, তা হলে জনসংখ্যার বিচারে সারা বিশ্বে তার আগে থাকত মাত্র পাঁচটি দেশ। চিন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, আমেরিকা এবং ব্রাজ়িল। শুধু কি তাই? স্বাধীনতার ৭৫ বছর পেরিয়েও ভারতবর্ষের অধিকাংশ প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশের। নরেন্দ্র মোদী হয়তো এ রাজ্যের নন, কিন্তু তাঁরও...
প্রশ্ন: সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি দল দু’টি চরিত্রগত ভাবে এক নয়। এ বিষয়ে আপনার কী মত? প্রণব বর্ধন: এই কাগজেই নির্বাচনের আগে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলাম যে, বামপন্থীরা একটা ভুল করছেন— ওঁরা দু’দলকে একই ধরনের শত্রু বলে মনে করছেন। মতাদর্শে ও কর্মপ্রণালীতে বিজেপি এখন ভারতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জগৎকে এক ভয়ানক বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, সাম্প্রদায়িক বিষজর্জর স্বৈরতান্ত্রিক হিন্দুরাষ্ট্রই ওদের নিশানা, সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। তৃণমূলের অনেক দোষ আছে—...
আমাদের ইতিহাসে ফোনে আড়ি পাতার উদাহরণ অনেক আছে। এই রকম আড়ি পাতার ঘটনায় কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী রামকৃষ্ণ হেগড়েকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। তারপরে নীরা রাদিয়ার কথা রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল, সেটা নিয়েও একটা কেলেঙ্কারি হয়ে গেল। পেগাসাসের সফটওয়ার যে এরা ব্যবহার করছে তা আমরা ২০১৯-এই জানি। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্তদের কম্পিউটারে ম্যালওয়ার ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং বিস্মিত হবার কোনও কারণ নেই। কিন্তু সরকার বারংবার কেন বলছে আমরা আইন মেনে চলছি? যদি আইন মানো তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিবের অনুমতি নিয়ে এই কাজ...
জরুরি অবস্থা (Emergency) ঘোষণার দিনটার স্মৃতি এখন ইষৎ ঝাপসা। সেই ঝাপসা স্মৃতির কাচ থেকে ধুলো সরিয়ে এটুকু বলতে পারি ইন্দিরা গান্ধী যখন জরুরি অবস্থার জন্য ক্ষমা চাইলেন আমাদের মনে হয়েছিল, ইতিহাসের এক দুঃসহ অধ্যায়ের অবসান হল। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো এর পুনরাবৃত্তি আর কখনও হবে না। ৪৬ বছর পেরিয়ে এসে আজ বুঝতে পারি, আমরা ভুল ভেবেছিলাম। জরুরি অবস্থার ভূত আমাদের আজও প্রতি পল অনুপলে আবার তাড়া করছে, মাত্রাটা স্রেফ আলাদা। সেদিনের জরুরি অবস্থা যদি গণতন্ত্রে কুঠারাঘাত হয়, তবে আজকের সংখ্যাগরিষ্ঠের রাজনীতি...
পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভোটে আর্থিক অস্বচ্ছতা রোখার শেষ চেষ্টাটুকুও জলেই গেল। ইলেক্টরাল বন্ড বিক্রির বিরুদ্ধে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর তরফে আইনজীবী প্রশান্তভূষণের দায়ের করা সমস্ত আবেদনই নাকচ করে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। আমাদের দুর্ভাগ্য মোদি সরকারের অন্যতম বড় দুর্নীতি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি হল না, দেশের শীর্ষ আদালতকেও বোঝানো গেল না বিষয়টি কেন গণতন্ত্রের পক্ষে অতি বিপজ্জনক। আমাদের ভয়, এ ব্যাপারে আম আদমির চোখ-কান...
পশ্চিমবঙ্গের এই নির্বাচনের প্রভাব শুধু এই রাজ্যের রাজনীতিতেই প্রভাব ফেলবে এমন নয়, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যতও নির্ভর করছে এই নির্বাচনের ওপর। যদি এই নির্বাচনে বিজেপি জেতে, তাহলে মোদী-শাহের নেতৃত্বাধীন বিজেপি অশ্বমেধের ঘোড়ার মতোই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে। সেক্ষেত্রে বিজেপি যে বিরোধী-মুক্ত ভারতের স্বপ্ন দেখে, সেই বিরোধী-মুক্ত ভারতের রূপটি পূর্ণতা পাবে এই বাংলায়। এই পরিস্থিতিকে আমরা নিঃসঙ্কোচে ‘নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র’ বলে অভিহিত করতে পারি। নির্বাচনী ফলাফলে বিজেপি যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় এবং সরকার গঠন...
ফেসবুকের বয়স মাত্র সাড়ে ষোলো বছর। কিন্তু বিশ্বে তার বিপুল বিস্তার। ভারতে ওই সংস্থার তিনটি ডিজিটাল সমাজমাধ্যম মঞ্চ খুবই জনপ্রিয় হয়েছে— ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আর হোয়াটসঅ্যাপ। ৪০ কোটি ভারতীয় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছেন, ফেসবুক ব্যবহার করছেন প্রায় ৩৫ কোটি। এই বিশাল প্রসার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় যখন দেখা যায় যে, এই ডিজিটাল মঞ্চের মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে বিদ্বেষপূর্ণ বার্তা। বিশেষত গত কয়েক বছরে ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে লাগাতার যে সব উস্কানিমূলক বার্তা প্রচার হচ্ছে, তার পিছনে ফেসবুক...
সে ঘরে বিদ্যুৎ-সংযোগও নেই। অরুণবাবুর যুক্তি, যতদিন না প্রতিটি মজুরের মাথায় ছাদ হচ্ছে, ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছচ্ছে, ততদিন এই সুবিধে তাঁরও প্রাপ্য নয়। লিখছেন পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা কমরেড অরুণকুমার রায় চলে গেলেন গত রবিবার। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সোমবার ধানবাদে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। একে রায় নামে তিনি লোকপ্রিয় ছিলেন। গত রবিবার ঝাড়খণ্ডে তাঁর মৃত্যুতে শ্রমিকের অধিকার নিয়ে লড়াইয়ের এক দীর্ঘ অধ্যায় থেেম গেল। সেই অধ্যায়কে ফিরে দেখতেই কলম ধরা। ১৯৩৫ সালে একে রায়ের জন্ম অবিভক্ত বাংলাদেশের রাজশাহী...
ম ঙ্গলবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালকে তাঁর অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, কারণ তাঁর সরকারের এক প্রবীণ আধিকারিকের দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই হানা দিয়েছিল। দৃশ্যত প্রতিহিংসামূলক এমন একটা আচরণ নরেন্দ্র মোদীর সরকার কেন করল? আপাতদৃষ্টিতে এ তো রাজনৈতিক আত্মহত্যার শামিল। দিল্লি সরকারের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রাজেন্দ্র কুমারের অফিসে এবং বাসস্থানে অনুসন্ধানের সঙ্গত কারণ থাকুক বা না-ই থাকুক, এই হানাদারির কল্যাণে মোদী সরকার কেজরীবালকে হিরো বানিয়েই ছাড়বে, এমন সম্ভাবনা জোরদার। প্রশ্ন হল, কেন তারা এটা করল...